ইতালীর প্রসিদ্ধ গণিতবিদ লুকা প্যাসিওলি ( Luca Pacioli ) ১৪৯৪ খ্রিষ্টাব্দে আর্থিক ঘটনাবলি সঠিক ও সুচারুভাবে লিপিবদ্ধ করার একটি পদ্ধতি বর্ণনা করেন। উক্ত পদ্ধতিটি দুতরফা দাখিলা পদ্ধতি নামে পরিচিত। দুতরফা দাখিলা পদ্ধতি হিসাবরক্ষণের একমাত্র নির্ভরযোগ্য, বিজ্ঞানসম্মত ও পূর্ণাঙ্গ পদ্ধতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি লেনদেনের দ্বৈত স্বত্ত্বার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিটি লেনদেনে দুই বা ততোধিক হিসাবখাত থাকে। এই হিসাবখাতগুলো দ্বৈত স্বত্বায় লিপিবদ্ধ করা হয়। একটি হলো ডেবিট, অপরটি ক্রেডিট। দুতরফা দাখিলা পদ্ধতির মাধ্যমে লেনদেনের দুটি পক্ষ অর্থাৎ ডেবিট ও ক্রেডিট পক্ষ লিপিবদ্ধ করা হয়। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি ডেবিট লিখনের জন্য সমান অর্থের ক্রেডিট লিখন হবে। ফলে বছরের যে কোনো সময় হিসাবের মোট ডেবিট টাকার অঙ্ক মোট ক্রেডিট টাকার অঙ্কের সমান হয়। সঠিকভাবে হিসাব প্রণয়নের জন্য যে ব্যবস্থায় লেনদেনসমূহের দ্বৈত স্বত্বা যাথাযথভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়, তাকে দুতরফা দাখিলা পদ্ধতি বলে।
উদাহরণের সাহায্যে দুতরফা দাখিলা পদ্ধতির ব্যাখ্যা প্রদান করা হলো :
অফিসের কর্মচারীকে বেতন বাবদ ৫,০০০ টাকা প্রদত্ত হলো। এ লেনদেনটিকে হিসাব বইতে দুতরফা দাখিলা পদ্ধতি অনুসারে লিপিবদ্ধ করতে হলে প্রথমে এর মধ্যস্থিত দুটি পক্ষ নির্ধারণ করতে হবে। এ লেনদেনটির মধ্যস্থিত পক্ষ দুটি হচ্ছে-
ক) বেতন হিসাব
খ) নগদান হিসাব
যেহেতু বেতন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের একটি ব্যয়, সেহেতু ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় বেতন হিসাব ৫,০০০ টাকা ডেবিট হবে। আবার যেহেতু বেতন প্রদানের ফলে নগদ টাকা ব্যবসায় হতে চলে গিয়েছে, সেহেতু নগদ তথা সম্পদ হ্রাস পাওয়াতে নগদান হিসাব ৫,০০০ টাকা ক্রেডিট হবে।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, এ লেনদেনটির জন্য বেতন হিসাব যে পরিমাণ ডেবিট হয়েছে, নগদান হিসাবটি সমপরিমাণ ক্রেডিট হয়েছে। এটাই হচ্ছে দুতরফা দাখিলা পদ্ধতির মূলনীতি।
Read more